Skip to main content
বিষয়সমূহ

অনলাইন চ্যালেঞ্জ

অনলাইন চ্যালেঞ্জগুলো কী?

অনলাইন চ্যালেঞ্জ বা ডেয়ার অর্থাৎ সাহসিকতা দেখানোর কাজগুলোতে সাধারণত ব্যাক্তিবর্গরা নিজেরা দুঃসাহসী কিছু করে থাকেন এবং তা রেকর্ড করেন, এবং যেটি অন্যদের আবার করার জন্য উৎসাহিত করতে তারা অনলাইনে শেয়ার করেন। এর বেশিরভাগটাই মজার এবং নিরাপদ, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা ক্ষতিকারক আচরণেও উৎসাহ দান করে, যার মধ্যে গুরুতর আঘাতের ঝুঁকিও থাকে। আমাদের কমিউনিটির নিয়মকানুন-এ বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জ নিষিদ্ধ।

আমরা কোনও বিপজ্জনক বা ক্ষতিকর চ্যালেঞ্জ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার রিপোর্ট পেলে, সেটির তদন্ত করি। কখনও কখনও আমরা কোনও ট্রেন্ডের প্রমাণ খুঁজে পাই না – এমনকি যখন অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম বা মিডিয়ায় সতর্কতা বিস্তারিতভাবে শেয়ার করা বা রিপোর্ট করা হয়।

কিছু চ্যালেঞ্জ প্রতারণা হয়। প্রতারণা হল এমন কোনও মিথ্যা, যা সত্য বলে বিশ্বাস করানোর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো হয়। কোনও বিদ্বেষপূর্ণ প্রতারণার উদ্দেশ্য হল ভয় ও আতঙ্ক ছড়ানো। যৌন নির্যাতন বা আত্মহত্যার সাথে জড়িত প্রতারণা এবং নিজের-ক্ষতির চ্যালেঞ্জগুলো নির্দিষ্টভাবে ক্ষতিকর। কোনও ব্যক্তি নিজের-ক্ষতি বা আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছেন বলে আপনি চিন্তিত হলে, এখানে আত্মহত্যা ও নিজের-ক্ষতির উপর সংস্থানগুলো দেখুন। আপনি যৌন নির্যাতন দ্বারা প্রভাবিত হলে, আপনি আমাদের নির্ধারিত পৃষ্ঠায় সহযোগীতার বিশেষ সংস্থান পেতে পারেন।

আমি কোনও অনলাইন চ্যালেঞ্জ দেখলে কী করব?

থামুন: একটু থামুন।

ভাবুন: এটা কি নিরাপদ? এটা কি ক্ষতিকর? এটা কি আসল? আপনি অনিশ্চিত হলে, কোনও প্রাপ্তবয়স্ক বা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করুন বা অনলাইনের অনুমোদিত সংস্থানগুলো থেকে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করুন।

সিদ্ধান্ত নিন: এটি ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্ষতিকর হলে অথবা সেটি তেমন কিছু কিনা তা নিয়ে আপনি নিশ্চিত না হলে, সেটি করবেন না। নিজেকে বা অন্যদের ঝুঁকিগ্রস্ত করা অর্থহীন।

পদক্ষেপ নিন: অ্যাপের মধ্যে ক্ষতিকর চ্যালেঞ্জ বা প্রতারণা রিপোর্ট করুন। সেগুলো শেয়ার করবেন না।

একটু সময় নিন

অনলাইন চ্যালেঞ্জ এবং ভাইরাল সতর্কতাগুলোর মূল্যায়ন করা কঠিন হতে পারে। আপনি কোনও ভিডিও দেখলে, আপনি কী দেখেছেন, সেটি দেখে আপনার অনুভূতি কি এবং আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে চান সেই বিষয়ে ভাবতে একটু সময় নিন। নিজেকে এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করুন:

আপনার বা অন্যদের জন্য কোনও চ্যালেঞ্জ নিরাপদ কিনা ভাববার সময়, নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন:

  • কী ভুল হতে পারে?
  • চ্যালেঞ্জ করছেন যে ব্যক্তি তার কি কোনো বিশেষজ্ঞের দক্ষতা বা প্রশিক্ষণ আছে?
  • দেখে কি মনে হচ্ছে তারা ঝুঁকি কমানোর সমস্ত রকম চেষ্টা করেছেন?
  • যদি তাই হয়, সেক্ষেত্রে কেউ আহত হবেন না নিশ্চিত করতে সেটা কি যথেষ্ট নাকি তাদের ভাগ্য ভালো?
  • ঝুঁকি কমাতে তাদের করা জিনিসগুলো কি আপনার জন্য উপলভ্য?
  • আপনি চ্যালেঞ্জটি চেষ্টা করলে, আপনি বা অন্যরা আহত হবেন না বলে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?
  • আপনি অথবা অন্য কেউ গুরুতরভাবে আহত হয়ে গেলে, কীভাবে সেটি আপনার জীবনে প্রভাব ফেলবে?
  • আপনার পরিবার ও বন্ধুদের জীবনে সেটা কতটা প্রভাব ফেলবে?

কিছু ঝুঁকি সুস্পষ্ট তবে অন্যগুলো বেশি জটিল এবং খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। আপনি নিশ্চিত না হলে, আপনি বিশ্বাসযোগ্য সংস্থান থেকে তথ্যের জন্য অনলাইনে অনুসন্ধান করতে পারেন অথবা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনি একজন কিশোর-কিশোরী হলে, আপনার বিশ্বাসযোগ্য কোনও প্রাপ্তবয়স্ককে জিজ্ঞাসা করুন। আপনার জীবনে থাকা বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির আপনাকে সুরক্ষিত করার একটা সহজাত প্রবৃত্তি থাকে, তাই তারা সমর্থন ও পরামর্শ দেওয়ার দারুণ উৎস। আপনি কি দেখেছেন তা বুঝতে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারেন এবং চ্যালেঞ্জটি করার জন্য নিরাপদ হলে সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করতে পারেন।

চ্যালেঞ্জটি খুবই বিপজ্জনক বলে আপনি সিদ্ধান্ত নিলে অথবা আপনি নিশ্চিত না হলে, সেটি করবেন না।

কিছু অনলাইন চ্যালেঞ্জে আঘাতের ঝুঁকি না থাকলেও অন্যভাবে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন:

  • চ্যালেঞ্জটিতে কারও ‘হেয় করা’ জড়িয়ে থাকলে, তার ফলে সেই ব্যক্তির কেমন মনে হবে?
  • এটি কি অন্যের ব্যক্তিগত সীমানা এবং অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল?
  • চ্যালেঞ্জটি করার ফলে কি সম্পত্তির ক্ষতি হতে পারে?
  • আপনি চ্যালেঞ্জটি করার ফলে কী ধরনের পরিণতির সম্মুখীন হতে পারেন?

চ্যালেঞ্জ বা ডেয়ার অর্থাৎ সাহস দেখানোর যে কাজগুলো বিব্রত বা হতাশ করে সেগুলো মজার বিষয় নয়। হয়রানি বা নির্যাতন, সম্পত্তির ক্ষতি এবং অপরাধমূলক আচরণ কোনও সময়ই গ্রহণযোগ্য নয়।

আপনি কোনও চ্যালেঞ্জ বা ভাইরাল সতর্কতা দেখলে, সেটি কোনও প্রতারণা বা গুজব হতে পারে যা গতি পেয়েছে সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন:

  • এই চ্যালেঞ্জ বা ডেয়ার কোনও মানুষ কি আসলে করছে নাকি এটা একটা কৌতুক?
  • এটা কোনও ভাইরাল সতর্কতা হলে, সেটা কি কোনও অনুমোদিত সূত্র থেকে এসেছে?
  • দেখে কি মনে হচ্ছে কন্টেন্ট শেয়ার করা ব্যক্তিটির বিষয়টি সম্পর্কে সরাসরি জ্ঞান আছে নাকি তিনি অন্য কারও থেকে শোনা বিষয়টিরই পুনরাবৃত্তি করছেন?
  • প্রতিবেদনটি কি পরিমার্জিত ও অবিচল ভাষায় রয়েছে নাকি এটিতে নাটকীয় বা রোমাঞ্চকর ভাষা আছে?
  • সতর্কতাটি কি আপনার আগে পাওয়া সতর্কতাগুলো মতোই?

অনলাইন কমিউনিটিগুলোর সবথেকে ভালো বিষয় হল কোনও কন্টেন্ট আকর্ষণহীন থাকবে নাকি ভাইরাল হবে তার সিদ্ধান্ত নিতে এখানে জড়িত থাকা সবাই একটি ভূমিকা পালন করে। লাইক করা, শেয়ার করা এবং ইতিবাচক মন্তব্য করা এই সবই হল একটি ভিডিওর জন্য আপনার সমর্থন দেখানোর উপায়। ভিডিওটির কি আপনার সমর্থন পাওয়ার যোগ্য?

TikTok ক্ষতিকর কন্টেন্ট পোস্ট করা নির্মাতাদের পুরস্কৃত করে না। কোনও চ্যালেঞ্জ ক্ষতিকর হলে সেটি শেয়ার করবেন না বা লাইক করবেন না। কোনও চ্যালেঞ্জ আকর্ষণ অর্জন করলে, অন্যদের সেটি দেখার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং অন্যরা সেটি করার জন্য প্রলুব্ধ হয়। এটা সহায়ক মনে হলেও, ক্ষতিকর চ্যালেঞ্জগুলো সম্বন্ধে অন্যদের সতর্ক করতে ভিডিওগুলোর তৈরি প্রায়ই এমন কিছুর জনপ্রিয়তা বাড়ায় যা আপনি লোকে দেখতে চান না বা আপনি অনিচ্ছাকৃতভাবে বিপজ্জনক কিছু কীভাবে করতে হবে সম্বন্ধে বিশদ দিয়ে দেন।

আপনি কোনও চ্যালেঞ্জ সম্বন্ধে কোনও সতর্কতা দেখলে, সেটি আর অন্যকে পাঠাবেন না। সতর্কতা শেয়ার করলে তা কোনও ক্ষতিকর চ্যালেঞ্জ বা প্রতারনা বেশি সংখ্যক জনগণের কাছে প্রকাশ করে দেয়। প্রতারনাগুলোর ক্ষেত্রে, এটা সেগুলোকে আরও বেশি বিশ্বাসযোগ্য বলে দেখায়।

হ্যাঁ। আমরা বিপজ্জনক, ক্ষতিকর বা অপরাধমূলক আচরণ তুলে ধরা কন্টেন্ট সরিয়ে দিই। এছাড়াও আমরা সেই সমস্ত ভিডিও সরিয়ে দেব যা বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জগুলোর আলোচনা করে, যদি সেগুলোতে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অপ্রকাশিত থাকে অথবা ক্ষতিকর আচরণের নির্দেশাবলী বা চিত্র অন্তর্ভুক্ত থাকে। কোনও ভিডিও ক্ষতিকর হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা বিষয়ে আপনি নিশ্চিত না হলে, আমাদের কাছে সেটির রিপোর্ট করুন, আমরা তা দেখে নেব।। কোনও ব্যক্তির অবিলম্বে ক্ষতি হতে পারে বলে আপনার বিশ্বাস থাকলে, আপনার আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।

পিতা-মাতা, অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের জন্য

ডাক্তার থেকে সংবাদ উপস্থাপক, উদ্যোক্তা থেকে ক্রীড়াবিদ যে কেউ কোনও অনলাইন চ্যালেঞ্জে যোগ দিতে পারেন। তবে কৈশোরকাল অন্বেষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সবথেকে বড় সময়কাল হওয়ায়, অনলাইন চ্যালেঞ্জগুলো বিশেষভাবে আকর্ষণীয় হতে পারে। আবার একই সময়, ঝুঁকি ও সুযোগ পরিমাপের জন্য কিশোর-কিশোরীদের সবসময় একই দক্ষতা থাকে না। এর অর্থ হল, কোন চ্যালেঞ্জ নিরাপদ এবং কোনটিসম্ভবত নয় সেই সিদ্ধান্ত নিতে তাদের আরও তথ্য ও নির্দেশনার প্রয়োজন থাকতে পারে।

যদিও এটি ভয়ঙ্কর বলে মনে হতে পারে, কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে অনলাইন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা সত্যিই জরুরি। বেশিরভাগ কিশোর-কিশোরী অনলাইন চ্যালেঞ্জ দেখেছে এবং অংশগ্রহণ করেছে, তাই তাদের সব চ্যালেঞ্জ বিপজ্জনক বললে সেটা বিশ্বাসযোগ্য হবে না। বদলে, তারা যে অনলাইন চ্যালেঞ্জ নিয়ে উৎসাহী তা আপনি বুঝেছেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলতে, শুনতে এবং শিখতে আপনি আগ্রহী বলে তাদের জানান।

যখন আপনি তাদের দেখা বা শোনা চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কথা বলবেন, তাদের সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো বুঝতে, পরিণতি বিবেচনা করতে (তারা অথবা অন্যরা আহত হতে পারে বলে সম্ভাবনা সমেত) এবং নিরাপদ পছন্দগুলো বেছে নিতে সাহায্য করুন। উপরের চার-ধাপের প্রক্রিয়া (থামুন, ভাবুন, সিদ্ধান্ত নিন, পদক্ষেপ নিন) হল কিশোর-কিশোরীদের ঝুঁকি সম্বন্ধে ভাবানোর একটি সহজ পদ্ধতি। কোনও চ্যালেঞ্জ বিপজ্জনক বলে আপনার উদ্বেগ থাকলে, কিশোর-কিশোরীদের সেটি বলুন এবং কেন তার স্পষ্ট কারণগুলো জানান।

চ্যালেঞ্জগুলো জনপ্রিয় কারণ এগুলো কিছু ইতিবাচক সুযোগ দেয়, যেমন বন্ধুদের সঙ্গে কিছু করা, শারীরিক শক্তি পরীক্ষা, অন্যদের হাসানো বা সৃজনশীল হয়ে ওঠা। আপনার কৈশোরপ্রাপ্ত সন্তান কোনও নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে, চ্যালেঞ্জটি কেন আকর্ষণীয় তা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলুন এবং তাদের আগ্রহ বা প্রয়োজনীয়তা পূরণের অন্য উপায়গুলো খুঁজে দেখুন।